আজ এই ধারাবাহিকের ৫ম পর্বে আপনাদের সাথে বনসাই তৈরি করার জন্য কিভাবে উদ্ভিদ ইৎপাদন করবেন তা নিয়ে আলোচনা করব। তো চলুন শুরু করি....
১) নিজে বীজ হতে চারা উৎপাদন।
২) কাটিং বা কলম পদ্ধতিতে চাড়া উৎপাদন।
৩) নার্সারী বা অন্যকোন স্হান হতে সরাসরি চারা সংগ্রহ করা।
আসলে বনসাই করার জন্য বীজ হতে নিজে উদ্ভিদ তৈরি করা টা অনেক আনন্দের কারন এতে আপনি একটি গাছ বীজ হতে তার সর্বচ্চো পরিনতি লাভ করা পর্যন্ত সকল আনন্দ উপভোহ করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে একটি সমস্যা থেকে যায় তা েহল বীজ হতে বনসাই করার উপযুক্ত চাড়া উৎপাদন করতে অনেক বেশি সময় (২-৪ বছর) লাগতে পারে। যা অসলে অনেক কষ্টকর। তবে এতে এক ধরনের আলাদা আনন্দ আছে। কিন্তু আজকার আমরা সবাই আসলে সময় নিয়ে বেশ চিন্তায় থাকি ও যে কোন কাজ কম সময়ে করতে চাই। আর তা ছাড়াও বীজ হতে চাড়া উৎপাদন করলে তা অনেক সময় মাতৃ উদ্ভিদের গুনাবলী বহন করে না বা প্রয়োজনীয় আকারে পাওয়াও যায় না। তাই সময়, বনসাই এর প্রয়োজনীয় আকার, ও আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে আমি এখানে ২ ও ৩ নং পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কাটিং বা কলম পদ্ধতিতে বনসাইঃ
পাইন ও কিছু কনিফার জাতীয় উদ্ভিদ ছাড়া বেশিভাগ বনসাই উদ্ভিদই কাটিং বা কলমের মাধ্যমে উৎপাদন করা যায়।
কাটিং বা কলম পদ্ধতির দুটি বিশেষ সুবিধা আছে তা হল....
ক) কাটিং হতে যে উদ্ভিদটি পাবেন তা দেখতে এবং তার গুনাগুন হুবহু মাতৃ উদ্ভিদের মত হবে। কিন্তু বীজ হতে প্রপ্ত উদ্ভিদ মাতৃ উদ্ভিদের মত না ও হতে পারে।
খ) বীজ হতে প্রপ্ত উদ্ভিদ বনসাই ট্রেনিং এর জন্য উপযোগী হতে অনেক সময় লাগবে যা আমি আগেই বলেছি। অপরদিকে কাটিং হতে প্রাপ্ত চারা তারথেকে কয়েকগুন কম সময়ে ট্রেনিং এর জন্য উপযুক্ত হবে।
কাঠের বয়স ও ধরনের উপর নির্ভর করে কাটিং কে ৩ টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়ে থাকে এবং কিছু কিছু বৃক্ষ ও গুল্ম হতে ৩ টি পদ্ধতিতেই চাড়া উৎপাদন করা যায়।
চলুন দেখেনিই কোন ধরনের কাঠ কখন কাটিং এর জন্য উপযুক্ত
নরম কাঠঃ যেসব গাছের কাঠ নরম তাদের কাটিং এর জন্য উপযুক্ত সময় হল বসন্তের শেষ বা গৃষ্ম কাল। এসব গাছের শেষ প্রান্ত রসালো ও নমনীয় কিন্তু জোরে বাকালে সেটি ভেঙ্গে যায়। নরম কাঠের কাটিং হতে দ্রুত ও আল্প সময়ে মূল গজায়। কিন্তু কাটিং এর সময় এদের কান্ডের চারপাশে আদ্র পরিবেশ বজায় রাখতে হয়। এবং লক্ষ রাখতে হয় কান্ডে যেন পাতা থাকে। এটিতে মূল গজানোর সময় যেন ঢলে না পড়ে ও মরে না যায় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হয়।
অর্ধকঠিন কাঠঃ যেসব গাছের কাঠ অর্ধ কঠিন অর্থাৎ একেবারে শক্ত না আবার নরম ও নয় তাদের অর্ধকঠিন কাঠের বৃক্ষে বলে। শরতের শেষে যখন কান্ড তার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি শেষ করে নতুন করে পরিনত হয় তখন অর্ধ কঠিন কাঠ কাটিং েএর জন্য বেশি উপযুক্ত। । যেসব গাছের কান্য হতে অর্ধ কঠিন কাঠের কাটিং তৈরি করা হয় তারকান্ডটি যেন যেন যতেষ্ঠ দৃঢ় হয় এবং যাতে জোরে বাঁকা করলে এটি পট করে ভেঙ্গে না যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। যেসব গছে সূচাকৃতি ও প্রসস্ত পাতা থাকে তাদের অর্ধ কঠিন কাঠ কাটিং হতে ভালো মানের চাড়া জন্মায়।
কঠিন কাঠঃ যেকোন গাছের পরিনত ও পূরনো কান্ড সাধারনত কঠিন কাঠ হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক পত্রঝড়া উদ্ভিদ শরতে অথবা শীতের শেষে যখন তার পাতা ঝড়ে যায় তখন এর কান্ড হতে কাটিং তৈরি করলে খুব দ্রুত এদের মূল গজায়।
নিচের ছবিটা দেখুন আশাকরি কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন। ( আমার মোবাইলের ক্যামেরা ভালো নয়)
আগামি পর্বে আলোচনা করব কিভাবে আপনি কাটিং শুরু করবেন। কিকি লাগবে ইত্যাদি নিয়ে।
আর হ্যা আপনারা কিন্তু আমি যে সময় গুলো উপযুক্ত বলে উল্লেখ করেছি সে সময়ের জন্য বসে থাকবেন না। আপনারা যে কোন সময় কাটিং শুরু করে দিতে পারেন। আমি উপযুক্ত সময় বলতে যে সময় সবথেকে ভালো হয় সেই সময়কে বুঝিয়েছি।
ভালো থাকবেন আর আমি আগামি ১-২ দিনের মধ্যেই পড়ের পর্ব লিখব ইনসাল্লাহ।
No comments:
Post a Comment